শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ধ্রুপদ প্রশিক্ষক ও গবেষক শফিক উদ্দিন আহমেদের ভাষ্যে, ধ্রুপদ ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত হলো:
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত: শাস্ত্রবদ্ধ সঙ্গীত এই অর্থে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কথাটি ব্যবহৃত হয়। শাস্ত্র বলতে বোঝায় বিধি, নিয়ম বা ব্যাকরণ। তাই বিধিবদ্ধ বা ব্যাকরণ সম্মত সঙ্গীত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নামে অভিহিত। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বলতে রাগ সঙ্গীতের ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা, ঠুংরী প্রভৃতি শাখাকে বোঝায়।
কেননা রাগ সঙ্গীত প্রকৃষ্ট নিয়মে আবদ্ধ। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি শাস্ত্রীয় নয় এমন সঙ্গীতের কথাও আসে। লোক সঙ্গীতকে বলা হয়েছে অশাস্ত্রবদ্ধ সঙ্গীত। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে যে, লোক সঙ্গীত ব্যাকরণের বিস্তৃত নিয়মে আবদ্ধ নয়।
রাগ সঙ্গীত মাত্রই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত রুপে কথিত হলেও প্রকৃত অর্থে ধ্রুপদই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। কেননা তাতেই রূপায়ণগত বিধি সর্বতোভাবে প্রতিপালনের ঐতিহ্য আছে। খেয়ালকেও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত রুপে অভিহিত করা যেতে পারে। খেয়ালেতর সঙ্গীত ধারা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পর্যায়ে পড়ে না।
ধ্রুপদ: ধ্রুপদ বর্তমান কাল অবধি প্রচলিত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রধান চার ধারার অন্যতম। এই চারটি ধারা যথাক্রমে ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা ও ঠুংরী নামে খ্যাত। এদের মধ্যে ধ্রুপদই সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও শুদ্ধতাশ্রয়ী।
প্রাচীন প্রবন্ধগীতি থেকে ধ্রুপদের উৎপত্তি। অনুমান করা হয় যে, ধ্রুপদ বলিতে বর্তমান কালে যে শ্রেণীর গানকে বোঝায় তার উৎস হচ্ছে ধ্রবপদ প্রবন্ধগীতি।
এই ধ্রুবপদ প্রবন্ধের ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমেই ধ্রুপদ গানের উদ্ভব ঘটে। ধ্রুপদ কথাটি ধ্রুবপদের সংক্ষেপ।
অর্থাৎ পরিশেষে সংক্ষেপে বলা যায় - শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রধান (ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা ও ঠুংরী) চারটি শাখার অন্যতম প্রধান শাখাটিই হলো ধ্রুপদ।
সহায়ক গ্রন্থ: সঙ্গীত কোষ, ড. করুনাময় গোস্বামী।
----শুভকামনা সহ ধন্যবাদ সবাইকে।
লেখক: শফিক উদ্দিন আহমেদ,
পরিচালক, সঙ্গীত বিদ্যাবীথি পাবনা,
গ্রন্থকার, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষা।
YouTube Channel: Shafique Ahmed Gaan
0 মন্তব্যসমূহ